Information

Maa Sarbamangala Mata Thakurani
Garhbeta, Paschim Medinipur
Garhbeta High School


মূর্তি : মা সর্বমঙ্গলার মূর্তি কোথায় পাওয়া গিয়েছিল সে সম্পর্কে বহু মতভেদ রয়েছে।
মনে করা হয় ইনি একজন তান্ত্রিক দেবী জঙ্গল মধ্যে শবসাধনার জন্য প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। অন্য মত অনুযায়ী দেবীর মূর্তি শিলাবতীর নদীর থেকে পাওয়া যায়। আরেকটি মতে,অসভ্য জনজাতির পূজনীয় বন বিবি, বর্তমানে মা সর্বমঙ্গলা রূপে পুজিত হন।
প্রথম মতটির স্বপক্ষে সর্বমঙ্গলা মন্দিরে আজও পুরনো প্রস্তরের তৈরি পুরানো বলির বেদি দেখা যায় যা নরবলির জন্য ব্যবহৃত হতো।
 
মন্দির : সর্বমঙ্গলা মন্দির এর তৈরি সম্পর্কেও বিবিধ কিংবদন্তি শোনা যায়।
১। একটি মত অনুযায়ী মা সর্বমঙ্গলা যখন বনের মধ্যে পুজিত হতেন তখন মা সর্বমঙ্গলা উজ্জয়িনী  মহারাজ বিক্রমাদিত্য কে স্বপ্ন দিয়ে ডেকে আনেন। মহারাজ মায়ের কাছে পঞ্চমুন্ডির আসনে বসে ক্ষমতার প্রার্থনা করলে তাল ও বেতাল নামের দুই অতি শক্তিশালী অনুচর কে মা মহারাজ বিক্রমাদিত্যের আজ্ঞাবহী করে পাঠান।
 
সেই তাল ও বেতাল এর ক্ষমতা পরীক্ষা করার জন্য মহারাজ বিক্রমাদিত্য পূর্বমুখী মন্দির কে উত্তরমুখী করে দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং সেই বেতাল তখন তার ক্ষমতা বলে মন্দিরকে উত্তর মুখে ঘুরিয়ে দেন। 
উজ্জয়িনী মহারাজ বিক্রমাদিত্যের এই এলাকায় আসার কোন ঐতিহাসিক প্রমাণ না থাকার জন্য এ ধারণা করা যেতে পারে যে এই বিক্রমাদিত্য আসলে মহারাজ বিক্রমকেশরী যিনি একসময় দন্ডভুক্তি বা দাঁতনের রাজা ছিলেন। এবং মহারাজ বিক্রমাদিত্যের  যে কাহিনী বেতালকে ঘিরে জনপ্রিয় তার সঙ্গে জড়িয়ে এই কিংবদন্তি জনশ্রুতিতে গড়ে উঠেছে। 
 
২। আরেকটি মত অনুযায়ী এই মন্দির বিশ্বকর্মা দ্বারা এক রাত্রের মধ্যে নির্মিত।  জঙ্গল মধ্যে একজন তান্ত্রিক এই মন্দির তৈরির জন্য বিশ্বকর্মা দেবতাকে এক রাত্রের মধ্যে মন্দির গড়ে দেওয়ার বরাত দেন।  রাত্রি শেষ হওয়ার আগেই একটি কোকিল ডেকে দেওয়ায় বিশ্বকর্মা মন্দিরের কাজ অর্ধ সমাপ্ত রেখে দেন । এর সাক্ষী স্বরূপ সেই কোকিলটির মূর্তি প্রস্তর রূপে আজও সর্বমঙ্গলা মন্দিরের পূর্ব দিকে বিরাজমান।
 
৩। সর্বাপেক্ষা প্রচলিত মত অনুযায়ী রাজা গজপতি সিংহ ,যিনি আউচ বংশের রাজা ছিলেন তিনি এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন । মন্দির প্রতিষ্ঠার দিন বর্তমান হুগলি জেলার ফুলুই গ্রাম হতে এক দ্বাদশ বর্ষীয় ব্রাহ্মণ বালক নিজ দুর্দশার কথা রাজাকে জানাতে সাহায্যের আশায় আসেন। কিন্তু কোন ভাবেই রাজার দেখা না পেয়ে মনের দুঃখে সর্বমঙ্গলা মন্দিরের উত্তর দিকে একটি গাছের নিচে বসে তার পিতার দেওয়া বীজ মন্ত্র ধ্যান করতে থাকেন। সেই মন্ত্র বলে সর্বমঙ্গলাময়ের সম্পূর্ণ মন্দির উত্তর মুখে ঘুরে যায়। যথা সময়ে লোকমুখে খবর পেয়ে রাজা গজপতি সিংহ এই ব্রাহ্মণ বালকের কাছে আসেন ও তার দুর্দশার কথা শুনেন এবং তাকে রাজ পুরোহিত পদে বরণ করেন।  ইনি ছিলেন উপেন্দ্র ভট্ট,  যিনি তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়েছিলেন।
 
 
বিভিন্ন তথ্য থেকে সংগৃহীত।
 
তথ্য যুক্তিকরণের জন্য যোগা যোগ করুন।